ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার সহজ ১০ টি উপায়

আসসালামু আলাইকুম সবাইকে আজকে আমাদের আর্টিকেলের মূল টপিক হলো ভালো শিক্ষার্থী কিভাবে হওয়া যায় এবং ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার সহজ ১০ টি উপায়।

এই আর্টিকেলের জন্য সকল সূচিপত্র এক নজরে দেখে নিন। ভালো শিক্ষার্থী হতে হলে কী কী গুণ কীভাবে অর্জন করা দরকার তা জেনে নেয়া যাক-

পরিকল্পিত পড়াশুনা

>আমরা আমাদের যাবতীয় কাজকর্ম করতে গেলে একটি পরিকল্পনা করে নিই। তাতে কাজটি কোন দিকে আগাতে পারে বা এর সর্বশেষ পরিণতি কি হতে পারে তার কিছুটা হলেও আন্দাজ থাকে।কিন্তু যদি পরিকল্পনা ছাড়া কোন কাজ করি তাহলে সেটি হবে নৌকায় মাঝি আছে কিন্তু হাতে বৈঠা নাই এর মত। পড়াশোনার ক্ষেত্রেও এই নিয়মটি ব্যতিক্রম নয়। আমরা আমাদের নিত্যদিনের পড়ালেখা যদি একটি রুটিন মাফিক শেষ করতে পারি, এবং পরবর্তী পরীক্ষার জন্য দৈনিক কত ঘন্টা পড়ালেখা পড়তে হবে তার একটি পরিকল্পিত রুটিন তৈরি করতে পারি,তাহলে কম মেধা নিয়ে তুলনামূলক অল্প সময়ে পরিকল্পনামাফিক গুছিয়ে পড়াশুনা করেও ভালো ফলাফল করা সম্ভব।


অগ্রাধিকার ঠিক করুন

একজন আদর্শবান ছাত্র কখনো পড়ার সময় কোন ধরনের ঝামেলা বা অনধিকার প্রবেশ পছন্দ করে না। তারা যখন পড়াশোনা বা কম্পিউটারে কাজ করে তখন সে কাজটিকেই প্রাইমারি কাজ মনে করে, অন্য কাজগুলোকে তারা সেকেন্ডারি কাজ হিসেবে নেয়। তারা ভাবে এইসব বিনোদন বা অন্য কোন কাজ এগুলো পরে যেকোনো সময় করা যাবে।তারা একটা কথাই ভাবে সেটা হচ্ছে পড়ার সময় পড়া,খেলার সময় খেলা।এজন্য একজন ভালো শিক্ষার্থী সব সময় তার অগ্রাধিকার ঠিক রাখে।

যেকোনো পরিবেশ-পরিস্থিতিতে পড়াশুনা

এমন অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যাদের বাসায় আত্মীয়স্বজন বেড়াতে আসলে,তারা তখন পড়ালেখা থেকে দূরে থাকে। এরকম করা ঠিক নয় কারণ আত্মীয়-স্বজন আসবে যাবে কিন্তু গতকালকের যে পড়াশোনা ফেলে রেখেছো সেটা কেউ এসে তোমাকে কমপ্লিট করে দিয়ে যাবে না সেটা নিজেকেই কমপ্লিট করতে হবে। তাই যে কোন পরিবেশ পরিস্থিতিতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। আমরা অনেকে দিনে পড়াশোনা করতে পছন্দ করি, আবার অনেকে রাতে পড়াশোনা করতে পছন্দ করি। কারো রাতে বা কারো দিনে পড়ালেখা করতে ইচ্ছে করে আমরা যে কোন সময় পড়াশোনা করি না কেন এটা খেয়াল রাখতে হবে যে আমরা সব সময় মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করছি ।

পড়াশোনার জন্য অনুসঙ্গগুলো গুছিয়ে রাখা

আমরা যেখানে পড়ালেখা করি সে জায়গাটি যদি গোছানো না হয় তাহলে পড়াশোনায় মনোযোগ বসে না কারণ হয়তো দেখা গেছে একবার গাইড প্রয়োজন অথবা দেখা গেছে একবার বই প্রয়োজন এই বই এবং গাইড খুঁজতে খুঁজতে যে সময় লাগে সেই সময় অনেকগুলো পেইজ মুখস্ত করা যায়।তাই পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছুই সুন্দরভাবে গুছিয়ে রাখতে হবে যেন যেকোনো দরকারই কাজে সকল কিছুই হাতের নাগালে পাওয়া যায় তাতে সময় এবং কিছুটা শ্রম ব্যয় হওয়া থেকে রক্ষা পাবে। এই সময়টুকু কাজে লাগিয়ে আমরা হোমওয়ার্ক বা পরা মুখস্থ করতে পারব তাই অযথা সময় নষ্ট করা থেকে বিরত থাকুন এতে একজন ভালো শিক্ষার্থী হয়ে ওঠা যায়।

পড়া অনুযায়ী শেখা

একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আপনার কাজ যেহেতু পড়াশোনা করা তাই আমরা যতটুকু পড়বো ততটুকুই শিকার চেষ্টা করব শুধু মুখস্থ করে গেলেই হবে না আমরা জানি মুখস্ত বিদ্যা পরিশেষে কোন কাজে আসে না। অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা কয়েক ঘন্টার ভিতরে একটি অধ্যায় শেষ করতে পারি আবার এমন অনেক শিক্ষার্থী ও আছে যারা একটি লাইন বারবার করার পরেও বুঝে আসেনা। এরকম হলে আমরা সময় নিয়ে পড়তে হবে এবং মুখস্থ না করে প্রত্যেকটি লাইন ভালোভাবে বুঝে বুঝে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। ভালোভাবে বুঝে পড়ার চেষ্টা করলে আমাদের অনেক প্রশ্নই জাগ্রত হবে। যা আমাদের নতুন নতুন বিষয় জানার আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে। তাই দৈনিক কম পড়ুন বা বেশি পড়ুন সেটের দিকে না তাকিয়ে যতোটুকু পড়বেন ততটুকুই যেন বুঝে আসে সেটাই চেষ্টা করুন।

কাজের তালিকা তৈরি করুন

ধরুন আপনাকে কালকের মধ্যেই একটি বড় অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে , এখন আপনি অনেক টেনশনে পড়ে আন্দাজে এসাইনমেন্টে লেখা শুরু করে দিয়েছেন এতে করে যেটি হবে আপনার কাজটি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ যেহেতু এটি একটি বড় অ্যাসাইনমেন্ট আর সময় যেহেতু খুবই কম তাই এ সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম যদি এই কাজটিকে ভাগ করে করে করতে পারেন তাহলে এই কাজটি খুব সহজে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে যেমন আমরা প্রথমে এসাইনমেন্ট এর কঠিন কাজগুলো করে ফেলতে পারি যেমন গ্রাফ চিত্র এছাড়া আরো অন্য কিছু প্রথমে শেষ করে তারপর আমাদের লেখা বা অন্যান্য কাজগুলো শেষ করতে পারো এতে করে আমাদের টাইম ম্যানেজমেন্ট ঠিক থাকবে।তাই পড়াশোনা বা জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে যেখানে কাজ করবেন সেখানেই কাজের একটি তালিকা তৈরি করার চেষ্টা করবেন ।

ভালো নোট নিন এবং তা ব্যবহার করুন

বইপড়া এবং ক্লাস লেকচার শোনা দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো মন দিয়ে করা উচিৎ। পড়তে পড়তে বা লেকচার শুনতে শুনতে যে বিষয়গুলো জরুরি মনে হবে তা অবশ্যই নোট করে নেবেন। পরবর্তীতে সেগুলো পরীক্ষা বা উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করবেন। এগুলো আপনাকে সবার থেকে আলাদা করে তুলবে। বিষয়টি আপনার মনে রাখতেও সাহায্য করবে।

কথা বলুন

একজন ভালো শিক্ষার্থী হিসেবে আপনাকে সবার সাথে সমান তালে চলার চেষ্টা করতে হবে সমান তালে চলার জন্য আপনাকে শিক্ষা দিতে সাথে বিভিন্ন বিষয়, পরীক্ষা, এসাইনমেন্ট সহ আরো নানা বিষয়ে তাদের সাথে মতবিনিময় করতে হবে। একজন ভালো শিক্ষার্থী একা থাকতে পারে না। আপনি যদি কোন কিছু না বুঝেন তাহলে আপনার শিক্ষককে প্রশ্ন করতে পারেন। ভালো বুঝতে পারলেই ভালো ফলাফল আসবে।যেকোন বিষয় না বুঝলে সে কারো হেল্প নিবেন এছাড়াও যেকোনো ধরনের বিষয় বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবেন এতে করে কমিউনিকেশন স্কিল আরো মজবুত হবে।

একসঙ্গে পড়াশুনা করুন

জ্ঞানের মাত্রাকে উন্নত করে তুলতে নিজে শুধু জানলেই হবে না। নিজের জানাকে অন্যের মধ্যে ছড়াতে হবে। আবার অন্যের কাছ থেকেও আমাদের কিছু না কিছু শেখার আছে। এজন্য আপনার অ্যাকাডেমিক পড়াশুনা বা যেকোনো পড়াশুনার মাঝে ‘গ্রুপ স্টাডি’ বা কয়েকজন একসঙ্গে হয়ে নিন। এতে জটিলতাগুলো কমে আসবে। এতে করে সবার পারফরমেন্সই একটা নির্দিষ্ট স্তরে চলে আসবে।

প্রতিনিয়ত নিজেকে যাচাই করুন

সবাই জানি যে জানার কোনো শেষ নেই। তাই সব জানি বা পারি এটা ভেবে বসে থাকা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সবসময় চোখ-কান খোলা রাখা উচিৎ। জানার ইচ্ছা বজায় রাখতে হবে। আর সেই মতো নিজেকে প্রতিনিয়ত ঝালাই করবেন, জানা অজানা নিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন। আর চূড়ান্ত কোনো পরীক্ষায় বসার আগে নিজের গতিপ্রকৃতি বুঝে নিন, নিজেকে পরীক্ষা করুন যে আপনি পুরোপুরি প্রস্তুত কিনা।

শেষ কথা

আপনি যেমনেই স্টুডেন্ট হন না কেন, যদি ভাল ভাবে উপরের রুলগুলু মেনে চলতে পারেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আশা করি সামনে ভাল ফলাফল আসবে।আসল কথা হল আমাদের একজন ভাল মানুষ হয়ে উঠতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিপ আইটি বাড়ীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url