পৃথিবীর গভীরতম খাদ - Mysterious Mariana Trench
আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিয় বন্ধুরা। আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় পৃথিবীর সর্বোচ্চ গভীরতা বিশিষ্ট খাদের নাম কি যার গভীরতা মাউন্ট এভারেস্ট থেকেও বেশি? আপনি কি বলতে পারবেন? জানা অজানার আজকের পর্বে আমরা পৃথিবীর অন্যতম রহস্যময় গর্তের রহস্য উন্মোচন করার চেষ্টা করব।
মারিয়ানা খাদ এতটাই গভীর যে এর মধ্যে মাউন্ট এভারেস্ট উল্টো করে ঢুকানো হলে সম্পূর্ণ মাউন্ট এভারেস্ট ধারণ করার পরও এর আরো অনেক উচ্চতা অবশিষ্ট থাকে। এখন আপনি ধারণা করুন কতটা গর্তটি গভীর? এখন পর্যন্ত খাদটির আবিষ্কৃত উচ্চতা ৩৬ হাজার ৭০ ফুট। বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত মারিয়ানার টেঞ্চের তলদেশের মাটি পর্যন্ত যেতে পারেনি। খাদ টি প্রায় ২ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং প্রায় ৭০ কিলোমিটার চওড়া। এটি হলো সমুদ্রের গভীরতম স্থান। এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে মারিয়ানা টেঞ্চের সৃষ্টি হলো?
পৃথিবীর ভূগর্ভস্থে ৯ টি বিশাল বিশাল টেকনিক প্লেট রয়েছে। বেশিরভাগ বিজ্ঞানী ধারণা করেন প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে দুইটি টেকটনিক প্লেটের মধ্যবর্তী ফাকের কারনে সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বের গভীরতম খাদ মারিনা টেঞ্চ। স্বাভাবিকভাবে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এই বিশাল খাদটির নাম মারিয়ানা ট্রেঞ্চ বা মারিয়ানা খাদ কেন রাখা হলো?
বিশ্বের গভীরতম এই খাদটি মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের ঠিক পূর্বে অবস্থিত হওয়ায় এর নাম এই দ্বীপের নামে নামকরণ করা হয়েছে মারিয়ানার টেঞ্চ। আর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের নামকরণ করা হয়েছে স্পেনের চতুর্থ ফিলিপ এর বিধবা রাণী মারিয়ানা অফ অস্ট্রিয়ার নামে। আপনি কি জানেন খাদটির সর্বোচ্চ গভীরতম বিন্দুর নাম কি?
মারিয়ানা খাদ এর সর্বোচ্চ গভীরতম স্থান হল চ্যালেঞ্জার ডিপ। সাল ১৯৪৮, এইচ এম এস চ্যালেঞ্জার-২ জাহাজ নিয়ে নাবিকেরা এই স্থানের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় গভীরতম এই অংশের সন্ধান পান। জাহাজের নাম অনুসারে গভীরতম অংশের নাম রাখা হয় চ্যালেঞ্জার ডিপ। এর গভীরতা ১১ হাজার ৩৩ মিটার, যা পৃথিবীর সর্বোচ্চ গভীরতম বিন্দু। ১৯৬০ সালে জানুয়ারি মাসে প্রকৌশলী জাক পিকার এবং মার্কিন নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ডোনাল্ড ওয়ালশ্ একটি জাহাজ নিয়ে চ্যালেঞ্জার ডিপে অবতরণ করেন। তারা ১০ হাজার ৯১৫ মিটার পর্যন্ত যেতে সক্ষম হন এবং এটিই ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ডুব। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে মারিয়ানা খাদে আদৌ প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব?
মারিয়ানা খাদ পৃথিবীর গভীরতম স্থান হওয়ায় সেখানে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না। তাই এই স্থানের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং এই স্থানের পানি ঘনত্ব উপরের পৃষ্ঠের পানির তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি। অর্থাৎ এই স্থানে যদি কোন মানুষ যায় প্রচন্ড পানির চাপে নিমিষেই শরীর ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো বিজ্ঞানীরা মারিয়ানা খাদে এককোষী অ্যামিবা ও এক প্রজাতির মাছের সন্ধান পেয়েছেন এবং সেখানে আরো প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশাল এই পৃথিবীতে রহস্যের শেষ নেই। এ সকল রহস্যের সামান্য কিছু মাত্র আমরা জানতে পারি। ঠিক তেমনি মারিয়ানা খাদের অল্প কিছু মত রহস্য বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পেরেছেন।
আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের নতুন কিছু জানতে সহায়তা করেছে। এরকম নিত্য নতুন রহস্য সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন এবং মারিয়ানা খাদ সম্পর্কে আপনি আগে জানতেন কিনা তা কমেন্টে জানিয়ে যান। সকলে ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

.jpg)

.jpg)
ডিপ আইটি বাড়ীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url